শুভমন গিল ব্যাটিং পজিশন : অবশেষে ইংল্যান্ডের মাটিতে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ শুরু হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। হেডিংলি টেস্ট ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা। ভারতের হয়ে চার নম্বরে ব্যাট করতে দেখা যাবে অধিনায়ক শুভমন গিলকে, আর তার পরেই পাঁচ নম্বরে আসবেন সহ-অধিনায়ক ঋষভ পন্ত। তবে এই ঘোষণার পর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে করুণ নায়ার কোথায় ব্যাট করবেন?
ভারতীয় দল যখন নতুন যুগে প্রবেশ করছে, তখন ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কোহলি-রোহিতের অবসরের পর শূন্যতা পূরণের দায়িত্ব যাদের কাঁধে, তারা কেমনভাবে জায়গা নেবে সেটাই এখন দেখার।
গিলের চার নম্বর নিশ্চিত, পন্ত পাঁচে
হেডিংলি টেস্টের আগে এক প্রেস কনফারেন্সে ঋষভ পন্ত বলেন, “আমার মনে হয় তিন নম্বর পজিশন নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। তবে চার ও পাঁচ ফিক্সড। শুভমন চার নম্বরে ব্যাট করবে, আর আমি পাঁচ নম্বরে থাকব।” পন্তের এই মন্তব্যে নিশ্চিত হয়ে গেল, ভারতের মিডল অর্ডারে গিল-পন্ত জুটির দায়িত্ব বাড়ল।
শুভমন গিল, যিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের সব ফরম্যাটেই দারুণ পারফর্ম করে এসেছেন, এবার দায়িত্ব নিলেন দলের নেতৃত্বের। কোহলির মতো মহাতারকার জায়গায় তিনি কতটা মানিয়ে নিতে পারেন, সেটাই এখন দেখার।
করুণ নায়ার কি তিনে খেলবেন?
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ধাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তিন নম্বর ব্যাটারের পজিশন। করুণ নায়ার কি সেখানে ব্যাট করবেন? ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে থাকা এই ব্যাটার ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে দ্বিশতরান করে নজর কেড়েছেন। টেকনিক্যালি সাউন্ড এবং অভিজ্ঞ এই ব্যাটার এমন এক পজিশনে উপযুক্ত, যেখানে ইংল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে প্রথম ধাক্কা সামাল দিতে হয়।
তবে করুণের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ সাই সুদর্শন। এই তরুণ বাঁহাতি ব্যাটার আইপিএল-সহ সব ফরম্যাটে ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করে চলেছেন। স্টাইলিশ ব্যাটিং, ব্যাট-প্যাড সংযুক্তি, কভার ড্রাইভে আত্মবিশ্বাস সবই রয়েছে তার মধ্যে। তাই টিম ম্যানেজমেন্ট চাইলে সুদর্শনকেই তিন নম্বরে খেলাতে পারে।
মিডল অর্ডার নিয়ে কনফিউশন
যদি সুদর্শন তিন নম্বরে ব্যাট করেন, তবে করুণ নায়ারকে মিডল অর্ডারে ঠেলে দেওয়া হবে, যা তার জন্য হয়তো খুব সুবিধার হবে না। করুণের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ মূলত ধৈর্যনির্ভর এবং ইনিংস গড়ে তোলার। ছয় বা সাত নম্বরে তাকে দেখা গেলে তার কার্যকারিতা হয়তো কমে যাবে।
ভারতীয় দল এমনিতেই রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বুমরাহ, সিরাজরা বোলিংয়ে নেতৃত্ব দেবেন। ব্যাটিংয়ে গিল-পন্ত জুটি গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে যদি করুণ বা সুদর্শন নিজেদের জায়গা তৈরি করতে পারেন, তবে ভারতের ব্যাটিং ইউনিট অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
উপসংহার
টেস্ট ম্যাচ মানেই ধৈর্যের পরীক্ষা, মানসিক দৃঢ়তার লড়াই। হেডিংলির সুইং সহায়ক পরিবেশে প্রথম কয়েকটি ওভারেই ম্যাচের গতিপথ নির্ধারিত হতে পারে। তাই তিন নম্বরে কে খেলবেন, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। করুণ নায়ার, যিনি দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফিরেছেন, তার জন্য এই সুযোগটি হতে পারে এক নতুন সূচনা। তবে তরুণ সুদর্শন যদি একাদশে সুযোগ পান, তবে সেটা হবে টিম ইন্ডিয়ার ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের একটি বড় পদক্ষেপ।
একদিকে অভিজ্ঞতা, অন্যদিকে তরুণ উদ্যম ভারতের এই ব্যাটিং কনফিগারেশন কীভাবে সাজানো হয়, সেটাই নজরে রাখার বিষয়। এখন শুধু অপেক্ষা, মাঠে নামলেই মিলবে সব প্রশ্নের উত্তর।