ঋষভ পন্থ টেস্ট ব্যাটিং : আজ থেকে শুরু হচ্ছে নতুন চক্রের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। আর এই চক্রের সূচনা হচ্ছে হাই-ভোল্টেজ ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ দিয়ে। আগের দুই আসরে ফাইনালে উঠেও নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে ট্রফি হাতছাড়া হয়েছিল ভারতের। এবার ইংল্যান্ড সফর থেকেই পয়েন্ট টেবিলে জোরদারভাবে নিজেদের অবস্থান গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামছে নতুন নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া।
রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির অনুপস্থিতিতে ভারতের টেস্ট নেতৃত্বের ভার দেওয়া হয়েছে শুভমন গিলকে। আর সহ-অধিনায়ক হিসেবে থাকছেন ঋষভ পন্ত, যিনি লম্বা বিরতির পর আবার টেস্ট দলে ফিরেছেন। কিন্তু শুধু উইকেটের পেছনে নয়, পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করেও এবার নজর কাড়তে হবে তাঁকে।
তবে পন্তের ব্যাটিং স্কিল নিয়ে যতটা কৌতূহল, তার চেয়েও বেশি আলোচনা চলছে তাঁর মানসিকতার ঘিরে। অতীতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ব্যাট হাতে তাঁর কিছু ‘ম্যাড জিনিয়াস’ ধরনের ইনিংস ক্রিকেটবিশ্ব দেখেছে। একদিকে যেমন সেই সব ইনিংসের সাহসিকতা প্রশংসা কুড়িয়েছে, অন্যদিকে দলে যখন ঠান্ডা মাথার প্রয়োজন ছিল, তখন বেপরোয়া শট খেলে উইকেট ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য সমালোচনাও শুনতে হয়েছে পন্তকে।
এই বিষয়ে এবার মুখ খুললেন স্বয়ং সচিন তেন্ডুলকর। ক্রিকেট ঈশ্বর বলেই পরিচিত এই কিংবদন্তি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সময় বুঝে নিজের খেলার ধরন পাল্টাতে শিখতে হবে পন্তকে। ইএসপিএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সচিন বলেন, “পন্তের মধ্যে স্বাভাবিক প্রতিভা রয়েছে, এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ওর হাতে বড় শট রয়েছে, কিন্তু ম্যাচের পরিস্থিতি বিচার করে শট সিলেকশনে বদল আনতেই হবে।”
সচিন আরও বলেন, “আমার যদি অধিনায়ক হওয়ার সুযোগ থাকত, তাহলে ১০ বারের মধ্যে ৯ বার পন্তকে বলতাম, ওর নিজের খেলা খেলতে। কারণ, ওর স্বাভাবিক খেলা থেকেই দল উপকৃত হয়। কিন্তু যদি কোনও ম্যাচ বাঁচানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন ওকে বলব আজ তোমাকে তোমার স্বভাবের বাইরে গিয়ে খেলতে হবে। আজ একটু শান্ত থাকতে হবে, ডিফেন্সিভ খেলতে হবে। কারণ একটা ভুল শটেই বদলে যেতে পারে গোটা ম্যাচের গতি।”
ক্রিকেটবিশ্বে সচিনের মতামতের গুরুত্ব কতটা তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। পন্ত যে তাঁর কথা কানে তুলবেন, তা নিয়েও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিশ্বাস প্রবল। কারণ গত কয়েক বছরে বারবার দেখা গেছে, চাপের পরিস্থিতিতে পন্ত বড় ইনিংস খেলে দলের হাল ধরতে পারেন। তবে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে গেলে শট নির্বাচন, ম্যাচ রিডিং এবং আত্মসংযম এই তিনটি জায়গায় উন্নতি প্রয়োজন বলেই মত সচিনের।
শুধু রানের খাতা খুলে রাখাই নয়, এবারের ইংল্যান্ড সফরে পন্তের লক্ষ্য থাকবে নিজের অভিজ্ঞতা, আগ্রাসন এবং ম্যাচ সেন্স এই তিনটির সঠিক মেলবন্ধন ঘটিয়ে নিজের এবং দলের জায়গা পাকা করা। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি আবার কতটা পরিণত হয়ে ফিরেছেন, সেটাই দেখার অপেক্ষায় থাকবেন টিম ম্যানেজমেন্ট ও কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্ত।