অসমে আধার কার্ড নীতিতে বড় পরিবর্তন | জেলা প্রশাসকের হাতে ক্ষমতা

Sourav Mondal
2 Min Read
আধার কার্ড অসম ২০২৫

আধার কার্ড অসম ২০২৫ : অসমে আধার কার্ড নীতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার ঘোষণায় রাজ্য প্রশাসনিক মহলে নড়েচড়ে বসেছে। এবার থেকে শুধুমাত্র জেলা প্রশাসকরাই প্রাপ্তবয়স্কদের আধার কার্ড ইস্যু করার ক্ষমতা রাখবেন। এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য হল, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের আধার কার্ড প্রাপ্তি পুরোপুরি রোধ করা।

বিগত কয়েক মাস ধরে অসমে বেড়েছে অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রবেশ এবং তাদের বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের ঘটনাও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা স্পষ্ট জানালেন, সরকার চায় যেন ভবিষ্যতে কোনও অবৈধ ব্যক্তি আধার না পায়। তিনি বলেন, “আমরা আধার প্রদানে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চাই। পরবর্তী মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নিয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই নতুন নিয়মের ফলে বাংলাদেশ থেকে যেসব অনুপ্রবেশকারী অসমে প্রবেশ করছেন, তাঁদের পক্ষে আধার কার্ড পাওয়া একেবারেই অসম্ভব হয়ে উঠবে। তবে রাজ্যের চা বাগান এলাকায় বসবাসকারী বহু প্রকৃত মানুষ এখনও আধার থেকে বঞ্চিত রয়েছেন, সেই সমস্যার সমাধানে জেলা প্রশাসকদের অধিকার থাকবে তাঁদেরকে আধার দেওয়ার।

হিমন্ত জানান, “গত রাতেও আমরা ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা আজ মন্ত্রিসভায় আলোচনা করেছি, এবং সিদ্ধান্ত হয়েছে যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যদি আধার চান, তবে কেবলমাত্র জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেই তা সম্ভব হবে।”

সম্প্রতি বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, রাজ্য সরকার ১৯৫০ সালের অভিবাসী (নিয়ন্ত্রণ) আইন কার্যকর করবে। এই আইনে জেলা প্রশাসকদের হাতে ক্ষমতা থাকবে যাতে তারা অবৈধ বিদেশিদের চিহ্নিত করে তাঁদের বহিষ্কার করতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সাংবিধানিক বেঞ্চও জানিয়ে দিয়েছে, ওই আইন এখনো কার্যকর এবং তার ভিত্তিতে সরকার পদক্ষেপ নিতে পারে।

এই ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা। বিরোধীদের মতে, এই নিয়ম প্রান্তিক মানুষের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি, “আমরা অসমকে নিরাপদ রাখতে বদ্ধপরিকর। সত্যিকারের নাগরিক যেন কোনওভাবে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করাই আমাদের দায়িত্ব।”

বর্তমানে আধার কার্ড শুধুমাত্র একটি পরিচয়পত্র নয়, বরং নাগরিকত্ব এবং বসবাসের বৈধতার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই দিক থেকে এই সিদ্ধান্ত অসমের ভবিষ্যৎ সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোতে গভীর প্রভাব ফেলতে চলেছে।

Share this Article
Leave a comment