অনুব্রত মণ্ডল তদন্ত : বোলপুর থানার আইসিকে ফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং তাঁর স্ত্রী ও মাকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে যে তদন্ত চলছে, তাতে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন অনুব্রত মণ্ডল—এমনটাই জানাল বীরভূম জেলা পুলিশ জাতীয় মহিলা কমিশনকে দেওয়া দ্বিতীয় অ্যাকশন টেকেন রিপোর্টে। পুলিশের দাবি, অনুব্রতকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন এই মুহূর্তে হয়নি। অভিযোগকারীর দুটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে রিপোর্ট এলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে অনুব্রতের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হবে কি না, তা বিবেচনা করা হবে।
যদিও পুলিশ এই রিপোর্টে ‘সহযোগিতা’র কথা বলছে, তবে এই ভাষা মেনে নিতে রাজি নন বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা। বিজেপির রাজ্য নেতা সজল ঘোষ সরাসরি অভিযোগ করেছেন, “রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন আজ শাসকদলের হয়ে কাজ করছে। অনুব্রত মণ্ডল তদন্তে সহযোগিতা করছেন—এই বক্তব্যে পরিষ্কার, তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।” তিনি আরও বলেন, “আইসির পরিবারের উদ্দেশে কুরুচিকর ভাষা, ধর্ষণের হুমকি—এসব সত্ত্বেও অভিযুক্ত হাসিমুখে থানায় ঢোকে ও বেরোয়। এটা কোন আইনের ব্যাখ্যা?”
প্রসঙ্গত, ৩০ মে বোলপুর থানায় তলব করা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। যদিও ২৯ মে FIR দায়ের হওয়ার পর অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। অবশেষে ৫ জুন গোপনে, এক অচেনা গাড়িতে চড়ে থানায় যান তিনি। থানার বাইরে তাঁকে হাসিমুখে বেরোতে দেখা যায়। সেই হাসি যেন গোটা তদন্ত প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
এর আগেও বীরভূম জেলা পুলিশের প্রথম রিপোর্টে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল জাতীয় মহিলা কমিশন। তারা জানিয়েছিল, আরও কিছু ধারায় FIR হওয়া প্রয়োজন। সেই প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় রিপোর্টে ‘সহযোগিতা’র কথা বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে পুলিশ—এমনটাই মনে করছেন অনেকেই। এখন দেখার বিষয়, ফরেন্সিক রিপোর্টে কী উঠে আসে এবং সেই অনুযায়ী আদৌ অনুব্রতের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয় কি না পুলিশ। তবে ততদিন পর্যন্ত বিরোধীদের তির্যক মন্তব্য আর জনমানসের সন্দেহ চলতেই থাকবে।