ওবিসি তালিকা স্থগিত : ওবিসি তালিকা নিয়ে রাজ্য সরকারের উপর বড় ধাক্কা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ওবিসির নতুন তালিকা সহ এই সময়কালে প্রকাশিত সমস্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দেয়। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে আদালত।
এই নির্দেশে স্থগিত হয়ে গেল কাস্ট সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াও, যা রাজ্য সরকার সম্প্রতি শুরু করেছিল। রাজ্য পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তাও এই নির্দেশে আপাতত বন্ধ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায়ের ফলে রাজ্য সরকার আপাতত ওবিসি তালিকার ভিত্তিতে কোনও নিয়োগ বা প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে পারবে না।
ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এই রায় ঘিরে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কলেজ ভর্তি প্রক্রিয়ার ঠিক মুখে এমন স্থগিতাদেশ আসায় অনেকেই অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। নতুন তালিকার ভিত্তিতে যাঁরা ফর্ম পূরণ করেছেন বা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তাঁদের এখন অপেক্ষা করতে হবে আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য।
এই মামলার পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘ ইতিহাস। ২০১০ সালের পর রাজ্য সরকার যে সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট জারি করেছিল, তা আগেই বাতিল করে দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই রায় সুপ্রিম কোর্টেও টিকে যায়। এরপর রাজ্য সরকার নতুন তালিকা প্রকাশ করে এবং বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যা এবার ফের স্থগিত হয়ে গেল।
এই রায়ের পরই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি দাবি করেন, তৃণমূল সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের ৭৬টি শ্রেণিকে অবৈধভাবে ওবিসি তালিকায় ঢুকিয়ে পিছিয়ে পড়া হিন্দুদের বঞ্চিত করেছে। তিনি বলেন, ২০১০ সালের আগে মাত্র ২০ শতাংশ মুসলিম ছিলেন ওবিসি তালিকায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনেই সেই সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যায়।
সরকারি তরফে এখনো কোনও প্রতিক্রিয়া না এলেও প্রশাসনিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে। তবে আপাতত যাঁরা নতুন তালিকার ভিত্তিতে সুবিধা পেতে চলেছিলেন, তাঁদের সেই অপেক্ষা দীর্ঘতর হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।