নিয়োগ দুর্নীতি : নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে আরও এক বিস্ফোরক মোড় নিয়েছে ঘটনাপ্রবাহ। মঙ্গলবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদনে যে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি হয়েছিল, সেই পদগুলোতেও নিয়োগের বিনিময়ে টাকা লেনদেন হয়েছিল। এই অভিযোগে আদালত চত্বরেও ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
তবে এখনও পর্যন্ত সিবিআই জানাতে পারেনি, ঠিক কতজন চাকরিপ্রার্থী এই ধরনের লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তদন্ত আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে আদালতের অনুমতি নিয়ে FIR দায়ের করতে হবে বলে জানানো হয়। বিচারপতি বসু সিবিআই-কে তৎক্ষণাৎ অনুমতি দেন এবং নির্দেশ দেন, কত সংখ্যায় এই ধরনের কারচুপি হয়েছে, তা খুঁজে বার করতে হবে।
এর আগে, গত ২৪ জুন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু নির্দেশ দিয়েছিলেন, SSC-এর শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার নিয়োগ ক্ষেত্রেও অন্যান্য বিষয়ের মতো দুর্নীতি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে। বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন, “সিবিআই-এর পক্ষে এটা বার করা খুব বেশি কঠিন হবে না।” সেই নির্দেশ অনুযায়ী তদন্তে নেমেই সিবিআই এই নতুন তথ্য আদালতে পেশ করে।
জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি হয়েছিল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে। তবে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে সেই নিয়োগ কার্যত থেমে যায়। কিন্তু তার আগেই কিছু পদে টাকা দিয়ে নিয়োগের চেষ্টা হয়েছিল বলে সিবিআই-এর সন্দেহ।
বিচারপতি বসু স্পষ্টভাবে জানতে চান, “কতজন প্রার্থী টাকা দিয়েছেন?” উত্তরে সিবিআই-এর আইনজীবী বলেন, “এই মুহূর্তে সেই তথ্য আমাদের হাতে নেই। FIR দায়ের করে তদন্ত চালাতে হবে।” এই বক্তব্যের ভিত্তিতে আদালত নতুন FIR দায়েরের অনুমতি দিয়ে দেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্তের পিছনে আসল উদ্দেশ্য কী ছিল— সেটাই এখন তদন্তের কেন্দ্রে। প্রকৃত চাহিদা মেটাতে এই পদ তৈরি হয়েছিল, নাকি ছিল এটা শুধুই এক দুর্নীতির পর্দা?
আগামী ৪ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি হবে। তদন্তের অগ্রগতির উপর নজর থাকবে গোটা রাজ্যের। জনগণের প্রত্যাশা, সত্যটা সামনে আসবে এবং যারা এই দুর্নীতির নেপথ্যে ছিলেন, তারা আইনের মুখোমুখি হবেন।