জি৭ সম্মেলন ২০২৫ ট্রাম্প মোদী ম্যাক্রোঁ বিতর্ক : সম্প্রতি জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে দেখা গেল কূটনৈতিক সম্পর্কের এক নতুন মোড়—তাতে যেমন ছিল টানটান উত্তেজনা, তেমনই ছিল রসিকতা, ঠাট্টা আর রাজনৈতিক দ্যোতনার মিশেল। সম্মেলনের মাঝপথেই ওয়াশিংটনে ফিরে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে অনেকেই অবাক, ঠিক তখনই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর খোঁচা—”নিশ্চয় ট্রাম্প ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির চুক্তি করতে গিয়েছেন।”
এই মন্তব্যে একেবারেই খুশি হননি ট্রাম্প। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় জবাব দেন, “ইমানুয়েল প্রচারের খোঁজে এমন বলছেন। ভুল বলছেন। উনি জানেনই না কেন আমি ফিরছি। এটা যুদ্ধবিরতির থেকেও বড় কিছু। উনি সবসময় ভুল বোঝেন। সামনে কী হয়, তা চোখ রাখুন।”
ট্রাম্পের এই পোস্টের পরেই শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে চর্চা। আর সেই আবহেই ভাইরাল হয় এক ভিডিয়ো, যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেখা যায় ম্যাক্রোঁকে আলিঙ্গন করতে। এরপর মোদী বলেন, “শুনলাম, আজকাল আপনি টুইটারে ঝগড়া করতে ব্যস্ত।” এই রসিকতার পর দুই নেতা হেসে ফেলেন। অনেকে বলছেন, মোদীর এই মন্তব্যের লক্ষ্য যে ট্রাম্প-ম্যাক্রোঁ টুইট বিতণ্ডা, তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। একদিকে এমন হালকা মেজাজ, অন্যদিকে ঘটেছে এক গম্ভীর আলোচনা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। প্রায় ৩৫ মিনিটের এই কথোপকথনে তাঁরা বিভিন্ন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ট্রাম্প মোদীকে আমেরিকা সফরের আমন্ত্রণ জানান, কিন্তু সূত্রের খবর, মোদী তা সৌজন্যের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন।
এই আলোচনার সময় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বিস্তারিত কথা হয়। মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই অপারেশনে কোনও তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা ছিল না। এমনকি ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তির সঙ্গেও এর কোনও সংযোগ নেই। মোদীর এই মন্তব্যে বোঝা যায়, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত এখন আত্মবিশ্বাসী ও নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
জি৭ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক পরিসরের বাইরেও যে কতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে ব্যক্তিগত রসায়ন ও কথোপকথন—এই ঘটনাগুলিই তার স্পষ্ট প্রমাণ। কূটনীতি যে কেবল আলোচনার ঘরেই সীমাবদ্ধ নয়, মাঝে মাঝে তা ফুটে ওঠে একেকটা টুইটে, হাসিতে কিংবা একেবারে নীরব প্রতিক্রিয়ায়।