ভারতীয় নৌসেনার প্রথম মহিলা ফাইটার পাইলট হতে চলেছেন আস্থা পুনিয়া | Aastha Punia Navy Fighter Pilot News

Sourav Mondal
3 Min Read
ভারতীয় নৌসেনার প্রথম মহিলা ফাইটার পাইলট

ভারতীয় নৌসেনার প্রথম মহিলা ফাইটার পাইলট : সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতীয় নৌসেনা আগামী বছরে এক নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে। দেশের সমুদ্র সীমা রক্ষাকারী এই বাহিনীতে প্রথম মহিলা ফাইটার পাইলট হিসেবে নাম লেখাতে চলেছেন সাব লেফটেন্যান্ট আস্থা পুনিয়া। উত্তরপ্রদেশের মীরাটের মেয়ে আস্থা নিজের কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও সাহসিকতার জোরে ছুঁয়ে ফেলেছেন স্বপ্নের সেই প্রথম সিঁড়ি – যা দেশের লক্ষ লক্ষ মেয়ের অনুপ্রেরণার উৎস হতে চলেছে।

শুক্রবার বিশাখাপত্তনমে আইএনএস দেগা-তে এক গর্বের মুহূর্তে আস্থা পুনিয়াকে ‘উইংস অফ গোল্ড’ সম্মান প্রদান করেন রিয়ার অ্যাডমিরাল জনক বেভিল, যিনি নৌসেনার অ্যাসিসট্যান্ট চিফ অফ নেভাল স্টাফ (এয়ার)। এই সম্মান পাওয়া মানেই একজন তরুণ অফিসার ফাইটার পাইলট হিসেবে পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ধাপে পৌঁছে গিয়েছেন। একই সঙ্গে এই সম্মান পেয়েছেন লেফটেন্যান্ট অতুল কুমার ধুলকেও।

তবে এখানেই শেষ নয়। ফাইটার পাইলট হিসেবে আস্থার আসল পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে এখন। পরবর্তী এক বছর গোয়ায় আইএনএস হংসে চলবে তাঁর চূড়ান্ত প্রশিক্ষণ। যেখানে থাকবে বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতির অনুশীলন, থাকবে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের ডেকের মতো পরিকাঠামোতে ল্যান্ডিং ও টেক-অফের বিশেষ প্রশিক্ষণ। যুদ্ধবিমান চালানো শিখবেন বাস্তব যুদ্ধবিমানে, যেমন মিগ-২৯কে বা রাফাল এম। এই প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারলেই আস্থা ভারতের প্রথম মহিলা নৌসেনা ফাইটার পাইলট হিসেবে সমুদ্রের বুক থেকে যুদ্ধবিমান ওড়াবেন — এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা হবে তখন।

বিপরীতে অনেকেই ভাবতে পারেন, আস্থা নিশ্চয়ই কোনও সেনা পরিবারের মেয়ে। কিন্তু না। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্র অনুযায়ী, আস্থার পরিবারের কেউ সশস্ত্র বাহিনীতে ছিলেন না। বিটেক শেষ করার পর নিজেই আবেদন করেছিলেন ভারতীয় নৌসেনার অ্যাভিয়েশন ব্র্যাঞ্চে। সেই সাহসিক সিদ্ধান্ত আজ তাঁকে দেশের এক অন্যতম উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

নৌসেনার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আস্থাকে নেভাল অ্যাভিয়েশনের ফাইটার স্ট্রিমে অন্তর্ভুক্ত করা শুধুমাত্র একটি ব্যক্তিগত সাফল্য নয় — এটি ভারতীয় নৌসেনার নারীশক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতির বাস্তব প্রতিফলন। উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারতীয় বায়ুসেনায় ইতিমধ্যেই ২০ জনের বেশি মহিলা ফাইটার পাইলট রয়েছেন। এবার সেই একই দৃষ্টান্ত তৈরি হতে চলেছে নৌসেনাতেও।

আস্থা পুনিয়ার এই অগ্রযাত্রা শুধুই তাঁর নয়, এটি ভবিষ্যতের হাজার হাজার তরুণীর অনুপ্রেরণা। যারা আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখে, যারা প্রমাণ করতে চায় — নারীর সামনে কোনও সীমানা নেই। দেশ আজ গর্বিত, কারণ একজন সাধারণ পরিবারের মেয়ে অসাধারণ হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছেন। আর আগামী দিন হয়তো তাকে আমরা দেখব সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে রাফালের ডানা মেলে আকাশে উড়ে যেতে — এক সাহসিক অধ্যায় লিখতে।

Share this Article
Leave a comment