ভারত বাঙ্কার বাস্টার মিসাইল : ভারত এবার শত্রুপক্ষকে সাবধান করে দিতে চলেছে—মাটি ফুঁড়ে ঢুকে আসবে এমন এক ভয়ঙ্কর অস্ত্র, যা কোনও গোপন ঘাঁটি বা বাঙ্কারকে রেহাই দেবে না। প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা DRDO-র তরফে শুরু হয়েছে অগ্নি-৫ মিসাইলের উন্নততর সংস্করণ তৈরির কাজ, আর সেটি আর পাঁচটা সাধারণ মিসাইলের মতো নয়—এটা হবে একেবারে ‘বাঙ্কার বাস্টার’, যার লক্ষ্য শত্রুর সবচেয়ে সুরক্ষিত, মাটির নিচে থাকা কাঠামো।
বর্তমানে যেটা অগ্নি-৫ আছে, সেটা ৫,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে পরমাণু অস্ত্রসহ আঘাত হানতে পারে। কিন্তু এবার পরিকল্পনা আরও বড়। যে মিসাইল তৈরি হচ্ছে, তা প্রায় ৭,৫০০ কেজি ওজনের বিশেষ বাঙ্কার বাস্টার অস্ত্র নিয়ে যেতে পারবে। এমন অস্ত্র, যা মাটির ১০০ মিটার গভীরে গিয়েও বিস্ফোরণ ঘটাতে পারবে। কল্পনা করুন—শত্রুপক্ষ যতই স্তরে স্তরে ঘাঁটি বানাক না কেন, মিসাইল ঠিক ঢুকে পড়বে ভিতরে এবং ভেতর থেকেই ছিন্নভিন্ন করে দেবে সব কিছু।
এই ‘বাঙ্কার বাস্টার’ কোনও নতুন ধারণা নয়। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অস্ত্রগুলোর মধ্যে পড়ে এই শ্রেণির অস্ত্র। আমেরিকা কয়েক বছর আগে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রের ওপর এমন বোমা ফেলে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। তবে তারা সেটা করতে বিশাল বোমারু বিমান ব্যবহার করেছিল। ভারতের ক্ষেত্রে, এই কাজটা আরও সহজ হবে—কারণ অগ্নি-৫ নিজেই সেই বাঙ্কার বাস্টার বহন করতে পারবে, কোনও আলাদা বিমানের দরকারই পড়বে না।
এই মিসাইলের দুটি নতুন ভার্সন তৈরি হচ্ছে। একটি মাটির ওপরের লক্ষ্যবস্তুর জন্য, আরেকটি একেবারে ভূগর্ভস্থ, শক্তপোক্ত ঘাঁটি ধ্বংসের জন্য। শোনা যাচ্ছে, এই নতুন ভার্সন এতটাই ক্ষমতাসম্পন্ন হবে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত জিবিইউ-৫৭ বাঙ্কার বাস্টারকেও টক্কর দিতে পারে।
ভারতের এই পদক্ষেপ কেবল একটা প্রযুক্তিগত সাফল্য নয়—এটা একটা বার্তা। স্পষ্ট করে বলা, “আমরা শুধু প্রতিরক্ষা নয়, প্রয়োজনে পাল্টা আঘাত করতে পুরোপুরি প্রস্তুত।” আজকের জটিল, অনিশ্চিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে এটা অত্যন্ত দরকারি বার্তা। শত্রু যদি ভাবে মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা যায়, ভারত এবার প্রমাণ করে দেবে—মাটি ফুঁড়ে এসেও আঘাত হানতে জানে।
এটা কোনও হুঙ্কার নয়, বরং আত্মবিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি। দেশের নিরাপত্তা যে কতোটা গুরুত্ব পাচ্ছে, তারই এক বাস্তব উদাহরণ। ভারত এখন শুধু প্রতিরক্ষায় নয়, কৌশলগত ক্ষমতায়ও নিজের জায়গা শক্ত করে নিচ্ছে—জমির ওপরে, আর এবার মাটির নিচেও।