ভারত ও চীনের উপর ট্রাম্পের ৫০০% শুল্ক প্রস্তাব | রাশিয়া থেকে তেল কিনলে যুক্তরাষ্ট্রে বিশাল শুল্ক

Sourav Mondal
3 Min Read
ট্রাম্প ৫০০ শতাংশ শুল্ক প্রস্তাব

ট্রাম্প ৫০০ শতাংশ শুল্ক প্রস্তাব : ওয়াশিংটনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে আবারও সক্রিয় হয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারে তার নজর ভারতের মতো শক্তিশালী অর্থনীতির দেশের দিকেও। রাশিয়া থেকে তেল ও জ্বালানি পণ্য আমদানিকারী দেশগুলোর ওপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক বসানোর প্রস্তাব নিয়ে মার্কিন সিনেটে একটি বিল অনুমোদনের দিকে এগোচ্ছে। এই বিলের স্পন্সর সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম জানিয়েছেন, ট্রাম্প সরাসরি তাঁকে এই বিলটি ভোটে তোলার কথা বলেছেন।

গ্রাহাম বলেন, “এই বিলের মূল উদ্দেশ্য হলো—যেসব দেশ রাশিয়া থেকে পণ্য কিনছে কিন্তু ইউক্রেনকে কোনোভাবে সাহায্য করছে না, তাদের আমদানি পণ্যের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ শতাংশ শুল্ক বসানো।” তাঁর অভিযোগ, চীন ও ভারত মিলে রাশিয়ার ৭০ শতাংশ তেল কিনছে, যার ফলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অর্থ পাচ্ছে পুতিন।

এই অবস্থান ট্রাম্পের আগের কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ধারাবাহিকতা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতে ট্রাম্প চাপ সৃষ্টি করছেন, আর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে সেই কৌশলেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

তবে পুরো বিষয়টিকে জটিল করে তুলেছে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য, যেখানে তিনি ভারতের সঙ্গে ‘কম শুল্কের’ একটি বাণিজ্য চুক্তির ইঙ্গিত দিয়েছেন। মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) তিনি বলেন, “আমার মনে হয় আমরা ভারতের সাথে একটি চুক্তি করতে চলেছি। এটি এমন একটি চুক্তি হবে যেখানে আমরা ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে পারব এবং প্রতিযোগিতা করতে পারব।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এই মুহূর্তে ভারত কাউকেই তাদের বাজারে প্রবেশ করতে দেয় না। তবে আমি মনে করি এবার তারা আমাদের সুযোগ দেবে। যদি তারা তা করে, তাহলে এটি একটি খুবই ভালো এবং কম শুল্কের বাণিজ্য চুক্তি হবে।”

ট্রাম্পের এই বক্তব্য দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। একদিকে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্কের আশা, অন্যদিকে রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে একই দেশের ওপর বিপুল শুল্ক আরোপের হুমকি—এই দ্বৈত বার্তা আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এই শুল্ক আরোপ বাস্তবে পরিণত হয়, তাহলে তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি আরও চাপে পড়বে। অন্যদিকে, পুতিনের উপর চাপ বাড়লেও চীন বা ভারত সহজে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে না বলেই অনেকের ধারণা।

এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—ট্রাম্প কি শুধু রাজনৈতিক কৌশলেই এমন প্রস্তাব দিচ্ছেন, নাকি ভবিষ্যতের জন্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি নীতির ইঙ্গিত দিচ্ছেন? এখন দেখার বিষয়, সিনেটে এই বিল কতটা সমর্থন পায়, আর বিশ্ব রাজনীতিতে এর প্রভাব কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।

Share this Article
Leave a comment