বাংলাদেশ আইনশৃঙ্খলা : বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এখন এক গভীর সংকট স্পষ্ট হয়ে উঠছে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার বিগত ১০ মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। মৌলবাদী হামলা, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, আর সর্বত্র মব ভায়োলেন্সের জেরে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। পুলিশের অকার্যকারিতার কারণে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে রাস্তায় নামতে হয়েছে, এবং তারাই এখন দেশের স্থিতি বজায় রাখার চেষ্টা করছে।
১৯ জুন ঢাকার সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল মহম্মদ শফিকুল ইসলাম জানালেন, মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও সেই অবস্থান বজায় রাখবে। তাঁর কথায়, সেনার পদক্ষেপের ফলে ইতিমধ্যেই হিংসার মাত্রা অনেকটাই কমেছে।
সেনাবাহিনীর এই সক্রিয়তা দেশের মানুষের মধ্যে খানিক স্বস্তি আনলেও সরকার ও পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ হামলার শিকার হয়েছেন, তাদের বাড়িঘর, উপাসনালয় বারবার আক্রমণ হয়েছে। অথচ সরকার কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকায় থেকেছে। সেনার এই দৃঢ় বার্তা তাই অনেকের কাছেই সরকারের ব্যর্থতার এক প্রকার প্রতিফলন।
নির্বাচন নিয়ে সেনাবাহিনীর কোনও প্রস্তুতি আছে কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও অফিসিয়াল নির্দেশনা সেনাবাহিনী পায়নি। তবে নির্দেশনা এলে তারা সেই অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে।
এই পরিস্থিতি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য এক অস্বস্তিকর ইঙ্গিত বয়ে আনছে। যেখানে সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নিতে হচ্ছে, সেখানে সরকারের নীতিগত ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তবে দেশের সাধারণ মানুষ এখন অন্তত সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে কিছুটা নিরাপত্তার আশ্বাস পাচ্ছেন। কতদিন সেনা এই দায়িত্ব সামলাবে, আর সরকার কবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে—সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে রয়েছে।