বাংলাদেশ উপদেষ্টার ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন, শুরু বিতর্ক

Sourav Mondal
3 Min Read
বাংলাদেশ উপদেষ্টার ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন

বাংলাদেশ উপদেষ্টার ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন : ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘটে গেল এক ঘটনা, যা মুহূর্তে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে আলোচনার ঝড় তুলেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া মরক্কোর মারাকেশে ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বিমানবন্দরের স্ক্যানিং-এর সময় তাঁর ব্যাগ থেকে গুলির একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার হয়।

ঘটনার খবর ছড়াতেই চারদিকে শুরু হয় তুমুল প্রশ্ন—একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি উপদেষ্টার ব্যাগে কীভাবে গুলির ম্যাগাজিন এল? তবে বিমানবন্দর সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই ঘটনায় তাঁকে আটকানো হয়নি, বরং নির্ধারিত ফ্লাইটেই তিনি দেশ ছেড়ে গিয়েছেন।

এই বিতর্কের মাঝেই মুখ খুলেছেন আসিফ নিজেই। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া তাঁর বিবৃতিতে তিনি জানান, “নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র রয়েছে। বিগত কয়েক মাসে গণ-আন্দোলনের নেতৃত্বে একাধিকবার হত্যাচেষ্টার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সরকারি প্রটোকল সবসময় থাকে না, তাই নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্যই অস্ত্র রাখি।”

তিনি আরও জানান, “ফ্লাইট ছিল ভোর ৬টা ৫০-এ। ভোররাতে তাড়াহুড়োয় প্যাকিং করতে গিয়ে ভুলবশত একটি ম্যাগাজিন ব্যাগে থেকে যায়। যেটি স্ক্যানারে ধরা পড়ার পর সঙ্গে সঙ্গে আমার প্রটোকল অফিসারের হাতে তুলে দিই। ইচ্ছে করে কিছু করিনি। শুধু একটা ম্যাগাজিন দিয়ে কেউ কীই বা করতে পারে? যদি আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য থাকত, অস্ত্রটাও সঙ্গে নিতাম। সেটা তো করিনি।”

এদিকে এই ঘটনার জেরে নতুন করে ওঠে আরেক অভিযোগ—সংবাদমাধ্যমকে চাপ দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আসিফ। কিন্তু এই অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “ঘটনার পর টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমে দীর্ঘক্ষণ পরে ইন্টারনেট সংযোগ পাই। তখন দেখি এই খবর ছড়িয়ে পড়েছে। আমি কোনো মিডিয়াকে কিছুই বলিনি, বলার সুযোগও হয়নি।”

সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠছে দেশের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে। একদিকে সরকারের উপদেষ্টা নিজেই যখন অস্ত্র রাখাকে নিজের সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য বলছেন, তখন সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। আসিফের কথায়, “নাগরিক হিসেবে যদি কেউ নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকেন, তাহলে নিয়ম মেনে অস্ত্রের লাইসেন্স করা তাঁর অধিকার।”

তবে ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত, তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। কেউ বলছেন, দায়িত্বে থাকা একজন ব্যক্তির এমন অসতর্কতা মোটেও কাম্য নয়। আবার কেউ বলছেন, এটি নিছকই একটি ভুল, যা বড় করে দেখানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু এক জিনিস স্পষ্ট—এই ঘটনায় যেভাবে নিরাপত্তা, আইন মেনে অস্ত্র রাখা, ও রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল।

Share this Article
Leave a comment