আইডাহো দমকলকর্মী গুলিবিদ্ধ : রোববার বিকেলে উত্তর আইডাহোর কোউর ডি’আলিন এলাকায় ভয়াবহ এক ঘটনা ঘটে গেল। ক্যানফিল্ড মাউন্টেনে আগুন নেভাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হলেন একাধিক দমকলকর্মী। তাদের মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কুটেনাই কাউন্টি শেরিফের অফিস। এই ঘটনার পর গোটা এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে আতঙ্ক আর শোক।
স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ দমকল বাহিনী খবর পায় যে ক্যানফিল্ড মাউন্টেনে আগুন লেগেছে। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পর পরিস্থিতি হঠাৎ পাল্টে যায়। আগুন নেভানোর কাজ শুরু হতেই একাধিক গুলির শব্দ ভেসে আসে। প্রথমে মনে হয়েছিল আগুনটি দুর্ঘটনাজনিত, কিন্তু পরবর্তী ঘটনার মোড় দেখে সন্দেহ জাগে। এক দমকলকর্মী বলেন, “এটা একদম স্পষ্ট যে আমাদের টেনে আনার জন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো হয়েছিল।”
গুলির ঘটনার পর দ্রুত এলাকায় জরুরি সতর্কতা পাঠানো হয় বাসিন্দাদের ফোনে। বার্তায় বলা হয়, “ক্যানফিল্ড মাউন্টেনে সক্রিয় বন্দুকধারী রয়েছে। আহতদের খবর পাওয়া গেছে, কিন্তু সংখ্যা জানা যায়নি। এলাকাটি এড়িয়ে চলুন।” প্রশাসনের মতে, হামলার পেছনে পরিকল্পনা থাকতে পারে। এখনো নিশ্চিত নয় বন্দুকধারী একজন নাকি একাধিক। পুলিশের একটি বিশেষ দল সন্দেহভাজনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আইডাহোর গভর্নর ব্র্যাড লিটল এই ঘটনাকে “জঘন্য প্রত্যক্ষ আক্রমণ” বলে উল্লেখ করেছেন। এক্সে দেওয়া বার্তায় তিনি লেখেন, “উত্তর আইডাহোতে আগুন নেভানোর সময় একাধিক বীর দমকলকর্মীর উপর আক্রমণ হয়েছে। এটি আমাদের সাহসী অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের উপর একটি অমানবিক হামলা। আমি সমস্ত আইডাহোবাসীকে তাদের ও তাঁদের পরিবারের জন্য প্রার্থনার অনুরোধ করছি। থেরেসা ও আমি ভীষণভাবে মর্মাহত। এখন আইন প্রয়োগকারী ও দমকল বাহিনীকে কাজ করতে দিন।”
বিকেল ৩টা ৩০ পর্যন্ত ক্যানফিল্ড মাউন্টেনের অন্তত দুটি বড় অংশে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। দমকল এবং পুলিশ যৌথভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে ও বন্দুকধারীকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। এই ঘটনায় সারা রাজ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আতঙ্ক আর কষ্টে ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই হামলা শুধু কয়েকজন দমকলকর্মীর উপর নয়, এটি একটি গোটা সম্প্রদায়ের উপর আঘাত। যারা প্রতিনিয়ত আমাদের নিরাপদ রাখতে প্রাণ বাজি রাখেন, তাঁরাই যদি লক্ষ্যবস্তু হন, তাহলে সমাজের নিরাপত্তা কোথায়? এখন প্রশ্ন উঠছে— হামলাকারীরা কারা? কেন এই পরিকল্পনা? এবং প্রশাসন কবে তাদের ধরতে পারবে?
সমস্ত চোখ এখন প্রশাসনের উপর। যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি উঠছে সর্বত্র। শোকস্তব্ধ আইডাহো অপেক্ষা করছে ন্যায়বিচারের।