রাশিয়া ভারত-চীনার সাথে আরআইসি জোট তৈরির বিষয়ে কথা বলেছেন, তবে এটি কি সম্ভব?

Asish Roy
4 Min Read

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভারভ সম্প্রতি একটি বড় বিবৃতি দিয়েছেন যে ভারত, চীন এবং রাশিয়া একসাথে একটি “ট্রিগুট” অর্থাৎ রিক (রাশিয়া-ভারত-চীন) জোট তৈরি করতে পারে। তার অঙ্গভঙ্গি পরিষ্কার। এশিয়ার তিনটি বড় দেশ আমেরিকা এবং পশ্চিমা দেশগুলির আধিপত্যের সাথে প্রতিযোগিতা করতে একত্রিত হতে পারে। তবে প্রশ্নটি হ’ল এটি কেবল বক্তৃতা বা কোনও শক্ত কৌশলগত চিন্তাভাবনা কিনা? ভারত কি সত্যিই চীনের মতো অবিশ্বাস্য প্রতিবেশীর সাথে দাঁড়াতে পারে?

যদি রাশিয়া, ভারত এবং চীন একসাথে কৌশলগত জোট গঠন করে তবে এটি অবশ্যই বিশ্বব্যাপী ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে। তিনটি দেশ একসাথে পশ্চিমা দেশগুলি, বিশেষত আমেরিকা এবং ন্যাটোকে অর্থনৈতিক, সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে। চীনের বিশাল অর্থনীতি, রাশিয়ার সামরিক শক্তি এবং ভারতের কৌশলগত অবস্থান একটি শক্তিশালী মেরু গঠন করতে পারে। তবে এটি কেবল সম্ভাবনার বিষয়, বাস্তবে এটিকে একটি ফর্ম দেওয়া অনেক কারণে এটি কঠিন।

রাশিয়ার উদ্দেশ্য এবং ইউক্রেন যুদ্ধ সংযোগ

রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলির অবরোধের মুখোমুখি হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সামরিক ও আর্থিক সহায়তা রাশিয়াকে চাপে এনেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া এশিয়ায় একটি নতুন মেরু তৈরি করতে চায় যা কেবল আমেরিকার প্রভাবকেই ভারসাম্য দেয় না, রাশিয়াকে বিকল্প কৌশলগত সমর্থনও দেয়। ভারত ও চীনকে একত্রিত করার তাঁর প্রচেষ্টা এই কৌশলটির একটি অংশ। যার নাম এশিয়ান unity ক্যের নাম দেওয়া যেতে পারে, তবে আসল উদ্দেশ্য হ’ল পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা।

ভারতের বৈদেশিক নীতি এবং ‘ভারত প্রথম’ নীতি

ভারতের বর্তমান বৈদেশিক নীতি ‘ভারত ফার্স্ট’ এর নীতির উপর ভিত্তি করে। ভারত এখন যে কোনও সামরিক বা রাজনৈতিক জোটের সাথে জড়িত কেবল তখনই যখন তার জাতীয় স্বার্থ সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকে। ভারত কোয়াড (আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া) এর সদস্য, যা চীনের প্রভাবকে ভারসাম্য বজায় রাখার একটি প্রধান প্ল্যাটফর্ম। এমন পরিস্থিতিতে, চীনের সাথে ট্রিগুটে যোগ দেওয়া ভারতের জন্য নীতিগত দ্বন্দ্ব তৈরি করবে।

চীনের কৌশল এবং ভারত ভয় পেয়েছিল

চীনের রেকর্ড ভারতের সাথে ক্রমাগত চাপযুক্ত ছিল। তা ডোকলাম বা গালওয়ান কিনা। চীন পাকিস্তানকে সামরিক সহায়তা দেয় এবং বারবার অরুণাচল প্রদেশকে তার অংশ হিসাবে বর্ণনা করে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের পক্ষে চীনের সাথে ‘গভীর কৌশলগত জোটের’ অংশ হওয়া কঠিন হবে। রিকের ধারণাটি নতুন নয়, তবে প্রতিবার এটি চীনের কারণে কোল্ড স্টোরেজে যায়।

সহযোগিতা বনাম কূটনীতিতে জোট

ভারত রাশিয়া এবং চীন উভয়ের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে চায়, তবে এটি তৃতীয় দেশের বিপক্ষে থাকা জোটের অংশ হতে চায় না। ভারতের নীতি হ’ল এটি তার সিদ্ধান্তটি স্বাধীনভাবে গ্রহণ করবে এবং কোনও সামরিক দলীয়তার অংশ হবে না। ভারত ব্রিকস এবং এসসিওর মতো ফোরামে চীন ও রাশিয়ার সাথে কাজ করে, তবে সেই প্ল্যাটফর্মটি “জোট” নয় “বহুপাক্ষিক সহযোগিতা” এর জন্য।

ভারত কি আরআইসির অংশ হতে পারে?

এই মুহুর্তে রাশিয়ার প্রস্তাবটি রাজনৈতিক চাপ এবং সংকেতের রাজনীতি বলে মনে হচ্ছে। ভারতের অগ্রাধিকার হ’ল বৈশ্বিক ভারসাম্য বজায় রাখা এবং তাদের স্বার্থ রক্ষা করা, চীনের মতো আক্রমণাত্মক দেশের সাথে এক -পাশের জোট না রাখা। ভারত-চীন মধ্যে আস্থার প্রাচীরটি দাঁড়িয়ে না হওয়া পর্যন্ত ভারতের পক্ষে এ জাতীয় ট্রিগটে যোগ দেওয়া প্রায় অসম্ভব।

Share this Article
Leave a comment