অমিত শাহ অপারেশন সিঁদুর মন্তব্য : রাজনীতি আর সেনাবাহিনী—এই দুইয়ের পথ আলাদা হলেও মাঝে মাঝে কিছু মন্তব্য সেই সীমারেখা ভেঙে ফেলে। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও অপারেশন সিঁদুর ঘিরে বিজেপির একাধিক নেতার মন্তব্য ঠিক তেমনই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ফলত অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। বিরোধীরা এই সুযোগে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই এবার হস্তক্ষেপ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দলের প্রশিক্ষণ শিবিরে সাফ বার্তা দিলেন, সেনা ও সেনা-অভিযান নিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন বা বেফাঁস মন্তব্য বরদাস্ত করা হবে না।
পাঁচমারিতে বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ। সেখানেই তিনি বলেন, “ভুল একবার হতে পারে, কিন্তু সেই ভুল যেন আর না হয়। অপারেশন সিঁদুরের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনও অসংবেদনশীল কথা নয়। মন্তব্যে সংযম না থাকলে নেতা যেমন বিতর্কে জড়ান, তেমন দলের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
এই সতর্কবার্তার পিছনে সাম্প্রতিক কিছু বিতর্কই মূল কারণ। কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে ঘিরে মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ এমন এক মন্তব্য করেছিলেন, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলে। তিনি কুরেশিকে ‘জঙ্গিদের বোন’ বলে কটাক্ষ করেন। এরপর উপমুখ্যমন্ত্রী জগদীশ দেওরা বলেন, সেনারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘মাথা নত’ করছে। এমন মন্তব্যে বিস্ময় ছড়ায়। শুধু সেনা নয়, অনেকেই এই মন্তব্যকে জাতীয় নিরাপত্তার অপমান বলে মনে করেন।
এই আবহেই বিজেপি বিধায়ক নরেন্দ্র প্রজাপতি মন্তব্য করেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি হচ্ছে রাষ্ট্রসংঘের নির্দেশে। এমন সব বেফাঁস কথাবার্তায় অস্বস্তি বাড়তে থাকে গেরুয়া শিবিরে।
এই পরিস্থিতিতে অমিত শাহের কড়া বার্তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি স্পষ্ট করে দেন, নেতাদের বক্তব্যে যদি শৃঙ্খলা না থাকে, তাহলে তার দায় দলকেও বইতে হয়। সেনাবাহিনী, দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে মন্তব্য করার আগে রাজনৈতিক নেতাদের আরও অনেক বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।
সেনাবাহিনী দেশের গর্ব, রাজনীতির হাতিয়ার নয়—এই সহজ সত্যটা অনেক সময় ভুলে যান নেতারা। অমিত শাহের বার্তায় সেই ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ মিলেছে। এখন দেখার, ভবিষ্যতে বিজেপির নেতারা সেই পরামর্শ কতটা গুরুত্ব দিয়ে মনে রাখেন। কারণ একটি ভুল মন্তব্য থেকে কত বড় বিতর্ক তৈরি হতে পারে, তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। এবার সতর্ক হওয়ার পালা।