খিদিরপুর অগ্নিকাণ্ড : গতকাল গভীর রাতে খিদিরপুর বাজারে হঠাৎই আগুন লেগে যায়। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আগুন, পুড়ে ছাই হয়ে যায় অসংখ্য দোকান। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। এখনও পর্যন্ত ঠিক কতগুলি দোকান পুড়েছে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। স্থানীয় কাউন্সিলর দাবি করছেন, প্রায় ৪০০টি দোকান পুড়েছে। অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অন্তত ১৩০০টি দোকান আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। আগুন নেভাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালালেও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, অনেক দোকান বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছিল। সেইসব দোকানেই বিপুল পরিমাণ দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল, যার ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও জানান, এলাকার বিধায়ক তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে তাঁকে ফোন করেছিলেন। ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় ২০টি দমকল ইঞ্জিন। অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। পুরো আগুন নেভানোর পরেই শুরু হবে তদন্ত। তবে অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে সকাল পর্যন্ত এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিল ধোঁয়া।
সকাল হতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী। সেখানে গিয়ে ক্ষুব্ধ জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, খবর দেওয়ার অনেক দেরি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকল বাহিনী। সময় মতো ব্যবস্থা নিলে এত বড় ক্ষতি হত না। এই মুহূর্তে বাজার চত্বর জুড়ে শুধুই ছাই আর ভাঙা কাঠামো। দোকান হারিয়ে মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের। অনেকে কেঁদে ভেঙে পড়েছেন—সারা জীবনের সঞ্চয়টা চোখের সামনে ধ্বংস হয়ে গেল।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—প্রশাসন কী সিদ্ধান্ত নেবে ক্ষতিপূরণ নিয়ে? যদি অনেক দোকান বেআইনি হয়, তাহলে কি সেই সব ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদাররাও সাহায্য পাবেন? নাকি তাঁদের বাদ দিয়েই তৈরি হবে পুনর্বাসনের নীতিগত পরিকল্পনা? এই ধোঁয়াশা নিয়েই দিন কাটছে ব্যবসায়ীদের। আগুন নিভলেও, প্রশ্নের আঁচ এখনও জ্বলছে খিদিরপুর বাজারের ধ্বংসস্তূপে।