ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ ভারতীয় নাগরিক : ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষের আগুন ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ইরানে আটকে রয়েছেন প্রায় ১৬০০ ভারতীয় নাগরিক। তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এগিয়ে এসেছে তেহরানে ভারতীয় দূতাবাস। জারি করা হয়েছে একাধিক হেল্পলাইন নম্বর এবং একটি বিশেষ টেলিগ্রাম লিঙ্ক, যেখানে ইরানে অবস্থানরত ভারতীয়রা যুক্ত হতে পারবেন। সেই লিঙ্কে বর্তমান পরিস্থিতি ও দূতাবাসের সমস্ত তথ্য নিয়মিতভাবে জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক থাকতে এবং নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে দূতাবাসের সঙ্গে। যে সমস্ত জরুরি নম্বর দূতাবাস থেকে শেয়ার করা হয়েছে সেগুলি হল: আপৎকালীন প্রয়োজনে +98 9128109109, হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের জন্য +98 901044557, +98 9015993320, +91 8086871709। ভান্দর আব্বাস অঞ্চলের জন্য রয়েছে +98 9177699036 এবং জাহেদানের জন্য +98 9396356649 নম্বর।
এই পরিস্থিতিতে সরকারের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে বিরোধীরা। AIMIM সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি জানিয়েছেন, ইরানে বর্তমানে ১৫৯৫ জন ভারতীয় আটকে রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ১৪০ জন তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল পড়ুয়া। পাশাপাশি ইরাকেও রয়েছেন আরও ১৮৩ জন ভারতীয় তীর্থযাত্রী। তিনি এই বিষয়ে রাষ্ট্রদূত আনন্দ প্রকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করার আর্জি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির কাছেও তিনি আবেদন জানিয়েছেন।
সম্প্রতি ইজরায়েল ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক কেন্দ্র লক্ষ্য করে যে ভয়াবহ আকাশপথে হামলা চালিয়েছে, তা থেকেই বর্তমান পরিস্থিতির সূচনা। ওই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ইরানের চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানি এবং আরও একাধিক উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিকের। এছাড়াও ৯ জন পারমাণবিক বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইজরায়েল।
এই ঘটনার জবাবে ইরান চালু করেছে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’। পাল্টা মিসাইল ও ড্রোন হানায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা অঞ্চল। এখনও পর্যন্ত এই যুদ্ধে দুই পক্ষ মিলিয়ে প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শুক্রবার থেকে টানা তিন দিন ধরে চলছে বিমান হানা, ড্রোন হামলা আর ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ।
এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে ইরানে আটকে থাকা ভারতীয়দের ঘরে ফেরানোই এখন দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবি। আতঙ্কের মধ্যে কাটছে তাঁদের প্রতিটি মুহূর্ত। সরকারের তরফে পদক্ষেপ শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট উদ্ধার পরিকল্পনা সামনে আসেনি। দেশজুড়ে প্রার্থনা একটাই—সবাই যেন নিরাপদে দেশে ফিরে আসেন।