ইরান ইজরায়েল সংঘর্ষ : ২৪ ঘণ্টায় তিন দফায় হামলা, আতঙ্কে কাঁপছে মধ্যপ্রাচ্য

Sourav Mondal
2 Min Read
ইরান ইজরায়েল সংঘর্ষ

ইরান ইজরায়েল সংঘর্ষ : মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইজরায়েলের উপর তিন দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইরান। এর আগে ইজরায়েলের তরফে ইরানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হয়। সেই পালটা প্রতিশোধ নিতে রকেট ছুঁড়ে জবাব দিল তেহরান। মধ্যরাতে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠল তেল আভিভ, জেরুজালেমের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি। বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথে গুঁড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হলেও, একটি ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়ে তেল আভিভের জনবহুল এলাকার একটি বহুতলে। আহত অন্তত ৩৪ জন। গুরুতর আহত এক মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এই হামলার পরে ইজরায়েলের প্রতিক্রিয়াও ভয়াবহ। শনিবার সকালে ইজরায়েলের পালটা হামলায় কেঁপে উঠল ইরানের রাজধানী তেহরান। বিস্ফোরণ ঘটে মেহরাবাদ বিমানবন্দরে, যা শুধু বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য নয়, সেখানেই রয়েছে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধবিমান ঘাঁটিও। আগুন লেগে যায় বিস্ফোরণের পর।

ইরান দাবি করেছে, এই সংঘর্ষে তাদের অন্তত ৭৮ জন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৩২০ জনের বেশি। এই ঘটনার জেরে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে গেছে, আতঙ্কে মানুষ গৃহবন্দি। তেহরান শহরের আকাশে চক্কর কাটছে যুদ্ধবিমান। ইজরায়েলের দাবি, গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানের বেশ কিছু শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানীকে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই এই হামলার নিন্দা করে বলেছেন, “ওরা যে ভয়ংকর অপরাধ করেছে, আমরা ওদের নিরাপদে পালাতে দেব না। প্রতিশোধ হবেই।” অন্যদিকে, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানইয়াহু বলেছেন, ইরান এখনো জানেই না, ওদের সামনে আর কী কী অপেক্ষা করছে। ইজরায়েলের প্রতিক্রিয়া কেবল শুরু হয়েছে।

এই সংঘর্ষের আবহে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওই অঞ্চলে মোতায়েন আমেরিকার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইজরায়েলকে সহায়তা করছে। যদিও হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হয়নি, তবে গোয়েন্দা সূত্রে নিশ্চিত যে আমেরিকা চুপচাপ ইজরায়েলকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে এখন আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা। যে কোনও মুহূর্তে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠতে পারে। সাধারণ মানুষ, শিশু, বৃদ্ধ—কেউই নিরাপদ নয়। যুদ্ধ চাইছে না কেউ, কিন্তু যুদ্ধ যেন নিজে থেকে এসে দরজায় কড়া নাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ জরুরি না হলে গোটা অঞ্চলই ডুবে যেতে পারে এক ভয়ংকর যুদ্ধের আগুনে।

Share this Article
Leave a comment