শুভমান গিল ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ ২০২৫ : ২০ জুন থেকে শুরু হতে চলেছে ভারতের ইংল্যান্ড সফরের ঐতিহাসিক পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। এই সিরিজ ঘিরে যেমন রয়েছে প্রতীক্ষা, তেমনই রয়েছে প্রশ্ন— রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির অবসরের পরে ভারতীয় দলের ব্যাটিং নেতৃত্ব এবার কার কাঁধে? উত্তর একটাই— শুভমান গিল।
এই প্রথম লাল বলের ক্রিকেটে নেতৃত্বের আসনে দেখা যাবে পাঞ্জাবের এই তরুণ তুর্কিকে। নেতৃত্বের ভারের পাশাপাশি টপ অর্ডারে ব্যাটার হিসেবে তাঁর দায়িত্ব আরও বেড়েছে। কিন্তু ইংল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশন, স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, সুইং করা নতুন বল, আর সেই সঙ্গে অভিজ্ঞ ইংল্যান্ড পেস আক্রমণ— এই সবকিছু পেরিয়ে কী সফল হতে পারবেন শুভমান?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সামনে এসেছে এক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় খোলাখুলি কথা বলেছেন শুভমানের টেস্ট ব্যাটিং নিয়ে। ‘রেভস্পোর্টস’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘দাদা’ বলেন, “শুভমানের জন্য শুভকামনা। ওর মধ্যে ট্যালেন্ট আছে, সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু ইংল্যান্ডের মাটিতে সফল হতে গেলে টেকনিক আরও শান দিতে হবে।”
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দেন, শুধু চোখ রেখে শট খেললেই চলবে না। “ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে প্রত্যেক বল একেক রকম আচরণ করবে। নতুন বল আরও চ্যালেঞ্জিং। ১০ রানে দুটো উইকেট পড়ে গেল, আর তখন গিল ব্যাট করতে নামল— এই পরিস্থিতির জন্য ওকে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “২ উইকেটে ১০০ রানের সময় ব্যাট করতে নামা আর ৪ উইকেটে ২০ রানের সময় ব্যাট করতে নামা, এই দুটো একেবারেই আলাদা অভিজ্ঞতা। তাই ডিফেন্স যেমন মজবুত করতে হবে, তেমনই অফ-স্টাম্পের বাইরে যাওয়া বল কীভাবে ছেড়ে দিতে হয়, সেটা জানা খুব জরুরি।”
৩২টি টেস্টে শুভমান গিল এখনও পর্যন্ত করেছেন ১,৮৯৩ রান। গড় ৩৫.০৫। যদিও ইংল্যান্ডে তাঁর রেকর্ড চিন্তার বিষয়। সেখানে ৬ ইনিংসে গড় মাত্র ১৪.৬৬। এই পারফরম্যান্সের মধ্যেই এবার তাঁকে লিডারশিপের চ্যালেঞ্জও নিতে হবে।
ভারতীয় দলের ভক্তরা অনেকটাই তাকিয়ে রয়েছেন তাঁর দিকে। রোহিত-বিরাট পরবর্তী যুগে তিনিই হতে পারেন ব্যাটিং স্তম্ভ। কিন্তু তার জন্য দরকার ধারাবাহিকতা, কন্ডিশন অনুযায়ী মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, আর মানসিক দৃঢ়তা। সৌরভের পরামর্শে এই দিকগুলো আরও একবার উঠে এল স্পষ্টভাবে।
ইংল্যান্ড সফর কোনও ভারতীয় ব্যাটারের জন্যই সহজ ছিল না কখনও। শুভমান গিলের সামনে রয়েছে কঠিন পরীক্ষা। ব্যাট হাতে শুধু রান করাই নয়, পুরো দলের মানসিকতা গড়ে দেওয়ার দায়িত্বও তাঁর। সৌরভের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের পরামর্শ মাথায় রেখে যদি শুভমান তাঁর খেলা গুছিয়ে নিতে পারেন, তাহলে হয়তো এ সফর তাঁর কেরিয়ারের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে।
এখন শুধু অপেক্ষা— ২০ জুনের। ট্রেন্ট ব্রিজের উইকেটে নামবে ভারত। আর সেই সঙ্গে শুরু হবে শুভমান যুগের প্রথম টেস্ট যুদ্ধ।