চুক্তি না করলে ভয়াবহ পরিণতি: ইরানকে হুমকি ট্রাম্পের

Sourav Mondal
3 Min Read
ইজরায়েল ইরান হামলা ট্রাম্প হুমকি

ইজরায়েল ইরান হামলা ট্রাম্প হুমকি : তেহরানে ভোরের আকাশ যেন রক্তে রাঙা। শুক্রবার ভোরে ইজরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এ একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ইরানের সামরিক ঘাঁটি। এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ইরানের সেনাপ্রধান মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের প্রধান হোসেন সালামি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানি এবং ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীর। ইরান ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, বহু সেনা অফিসার ও গবেষকের মৃত্যু হয়েছে এই হামলায়। দেশের ভিতরে গভীর ক্ষোভ, বাইরের দুনিয়ায় চাপা আতঙ্ক।

https://priokhobor.com/এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিস্ফোরক বার্তায় লেখেন, “এরই মধ্যে বহু মানুষ মারা গিয়েছেন। কিন্তু এখনও সময় রয়েছে এই রক্তপাত থামানোর। ইরানের হাতে সময় আছে সম্মানজনক চুক্তির মাধ্যমে নিজেদের সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার।” তাঁর মন্তব্যে কোনও রাখঢাক নেই—এই পরিস্থিতির জন্য ইরানকেই দায়ী করেছেন তিনি। ট্রাম্প আরও জানান, এই হামলা নিয়ে আগেই তথ্য ছিল আমেরিকার কাছে এবং ইরানকে বারবার সতর্কও করা হয়েছিল। কিন্তু তেহরান কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায়, এই হামলা অনিবার্য ছিল বলে দাবি তাঁর।

২০১৫ সালে হওয়া ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৯ সালে আমেরিকাকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তারপর থেকেই ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি জোরদার করে। যদিও নতুন করে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিলেও, ইরান মার্কিন শর্তে সম্মত হয়নি। যার ফলশ্রুতি এই সঙ্ঘাত—এই বার্তাই যেন ছুঁয়ে যাচ্ছে হোয়াইট হাউসের প্রতিটি কোণে।

ইজরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলি একের পর এক নিশানা করেছে ইরানের সামরিক এবং পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা শুধু একটি সামরিক অভিযানের চেয়ে অনেক বেশি। এটি একটি কৌশলগত বার্তা, যার মাধ্যমে পশ্চিমী বিশ্ব বুঝিয়ে দিল, পরমাণু শক্তির দৌড়ে ইরানকে তারা ছাড় দেবে না। একইসঙ্গে এটাও স্পষ্ট যে, এই সঙ্ঘাত এখনই থামছে না। ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন—‘এটা কেবল শুরু।’

এই অবস্থায় সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—ইরানের পালটা জবাব কী হবে? মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন যুদ্ধের মেঘ কি ক্রমেই ঘনিয়ে আসছে? সাধারণ মানুষের মনে উদ্বেগ, আতঙ্ক—কখন কোথায় বোমা পড়বে, তার ঠিক নেই। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, তেহরান হয়তো এখনই প্রতিশোধ নেবে না, কিন্তু প্রতিশোধ নেবে, তা নিশ্চিত।

শুধু সামরিক ঘাঁটি নয়, এই হামলায় যেন কেঁপে উঠেছে কূটনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বিশ্বের শান্তি ব্যবস্থাও। ইরান আর ইজরায়েলের এই লড়াই শেষ কোথায় গিয়ে ঠেকবে, কেউ জানে না। তবে এটা নিশ্চিত—মধ্যপ্রাচ্যের মাটি আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে।

Share this Article
Leave a comment