চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম পদপিষ্ট ঘটনা : অবশেষে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরের সেই শোকাবহ ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ খুললেন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘দ্য ওয়াল’, রাহুল দ্রাবিড়। কর্ণাটকের এই প্রাক্তন ক্রিকেটার, যাঁর শৃঙ্খলাপরায়ণতা আর শান্তস্বভাব বহুবার ক্রিকেটপ্রেমীদের মুগ্ধ করেছে, এই ঘটনার অভিঘাতে যেন ভিতরে ভিতরে নুয়ে পড়েছেন। মুখে যতই সংযম থাকুক, চোখেমুখে হতাশার ছায়া স্পষ্ট।
ঘটনাটা যে কতটা ভয়াবহ ছিল, তা আর নতুন করে বলার নয়। আইপিএলের ১৮তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আরসিবি-র উল্লাসে মাতোয়ারা হয়েছিল গোটা বেঙ্গালুরু। স্টারদের এক ঝলক দেখতে প্রিয় দলকে ঘিরে উন্মাদনায় চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরের রাস্তা প্লাবিত হয়েছিল প্রায় ২.৫ লক্ষ সমর্থকে। আর সেই ভিড়ই ডেকে আনে অঘটন। পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ১১ জন। আহত অন্তত আরও ৫০। এমন একটা জয়োৎসব, যা হওয়ার কথা ছিল চিরস্মরণীয়, তা রাতারাতি হয়ে গেল বিভীষিকাময়।
এই ঘটনার পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে – কীভাবে এমন এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হল? নিরাপত্তার এত বড় ফাঁক কেন? আরসিবি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই পুলিশি পদক্ষেপ শুরু হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে NDTV-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাহুল দ্রাবিড় বলেন, “খুবই হতাশাজনক এবং মর্মান্তিক ঘটনা। বেঙ্গালুরুর মানুষ খেলা-পাগল, এটা আমরা জানি। আমি নিজেও এখানকার ছেলে। এখানকার মানুষ ক্রিকেট তো ভালোবাসেই, এমনকি কবাডি কিংবা ফুটবলও সমানভাবে উপভোগ করে। কিন্তু এমন কষ্টের মুহূর্ত আমাদের সবাইকে প্রশ্ন করতে বাধ্য করছে কীভাবে এই ঘটনা ঘটল?”
তিনি আরও বলেন, “যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের জন্য আমাদের সমবেদনা রইল। এমন কিছু আর কখনও যেন না ঘটে এটাই প্রার্থনা। কারণ খেলাটা আনন্দ দেওয়ার জন্য, প্রাণ নেওয়ার জন্য নয়।”
দ্রাবিড়ের এই প্রতিক্রিয়ায় যেন ক্রিকেটসমাজেরই মনের কথা উঠে এল। যাঁর মুখে সাধারণত কোনও তীব্রতা দেখা যায় না, তিনিও আজ বিষণ্ন। এটা বোঝাতে যথেষ্ট, আমরা আসলে কী হারিয়েছি। আরসিবি হয়তো প্রথমবার আইপিএল জিতেছে, কিন্তু সেই খুশির দাম অনেক বড় হয়ে গিয়েছে।
এখন সময় প্রশাসনের, সংগঠকদের, এবং ফ্র্যাঞ্চাইজির একসঙ্গে বসে ভাবার ভবিষ্যতে যেন এমন কোনও মুহূর্ত না আসে, যেখানে ‘উল্লাস’ শব্দটার মানে হয়ে দাঁড়ায় ‘আশঙ্কা’। কারণ জয় যতই মধুর হোক, কোনও প্রাণের বিনিময়ে সেটা হোক এটা কেউ চায় না।