দিঘা রথযাত্রায় বিপত্তি : দিঘার জগন্নাথ ধাম কালচারাল সেন্টারের প্রথম রথযাত্রা ঘিরে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। বহু আড়ম্বর ও প্রস্তুতির পর শুক্রবার এই রথযাত্রা শুরু হলেও, কিছুদূর এগোতেই আচমকা থেমে যায় রথ। কাঠের চাকার ওপরে বসানো লোহার পাত খুলে যাওয়াতেই এই বিপত্তি—এমনটাই দেখা যাচ্ছে ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাল ভিডিয়োয়।
এই ভিডিয়োটি শেয়ার করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “রথের চাকা আটকে গেলো, লক্ষণ কিন্তু ভালো নয়।” তিনি আরও বলেন, “ভগবান সর্বশক্তিমান। মহাকুম্ভকে ‘মৃত্যু কুম্ভ’, সনাতন ধর্মকে ‘গন্দা ধর্ম’, ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানকে গালাগাল বলা, তীর্থক্ষেত্রের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ধর্মবিরুদ্ধ আচরণ করা—এসবের ফল স্বরূপ এই রকম অশুভ সংকেত স্বাভাবিক।”
তাঁর এই বক্তব্যে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ে। বিরোধীদের একাংশ বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী ধর্মীয় আবেগকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে দাবি, রথযাত্রার প্রস্তুতিতে কোনও খামতি ছিল না, এটিকে অতি সাধারণ একটি যান্ত্রিক ত্রুটি হিসেবেই দেখতে হবে।
স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, এমন ঘটনা অনভিপ্রেত হলেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রথের চাকা মেরামতের কাজ তৎপরতার সঙ্গে শুরু হয়েছে এবং অনুষ্ঠানের বাকিটা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জনমনে বিভক্ত প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, ধর্মীয় রীতি না মানার ফলেই এমন ঘটনা ঘটেছে। আবার অনেকে এটিকে নিছকই প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা বলে মনে করছেন। স্থানীয় পুরোহিতদের মতে, “রথ আটকে যাওয়া সনাতন ধর্মে অশুভ সংকেত হিসেবে বিবেচিত হলেও, এধরনের যান্ত্রিক ঘটনায় অতিরিক্ত ব্যাখা না দেওয়াই ভাল।”
যাত্রাপথে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন এই নতুন ধর্মীয় কেন্দ্র দেখার আশায়। অনেকেই হতাশ হলেও তাঁদের বিশ্বাস, এটি শুধুই একটি ছোট বাধা। আগামী দিনে দিঘার এই জগন্নাথ ধাম সত্যিই রাজ্যের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র হয়ে উঠবে—এই আশা রয়ে গেছে অনেকের মনেই।