ইজরায়েলে ভারতীয়দের উদ্ধারে শুরু হচ্ছে ‘অপারেশন সিন্ধু’ | যুদ্ধের সপ্তম দিনে কড়া পদক্ষেপ ভারতের

Sourav Mondal
2 Min Read
ভারত অপারেশন সিন্ধু ইজরায়েল যুদ্ধ

ভারত অপারেশন সিন্ধু ইজরায়েল যুদ্ধ : চারপাশে শুধু বিস্ফোরণের শব্দ। আকাশের বুকে ছুটে চলা ক্ষেপণাস্ত্র। আতঙ্কের সেই ভয়াল ছবি চিরকাল মনে গেঁথে থাকবে বলে জানালেন ইরান থেকে ফিরে আসা এক ভারতীয় পড়ুয়া। বৃহস্পতিবার ভোরবেলায় দিল্লি বিমানবন্দরে পা রাখার পরও গলার কম্পন লুকোতে পারছিলেন না তিনি।

“আমরা আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখেছি। আর আশেপাশের এলাকায় বোমার বিস্ফোরণ হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল বুঝি আর ফেরা হবে না। সেই ভয় আর আতঙ্ক ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়,” বলছিলেন মেডিকেল পড়ুয়া প্রীতম দাস (নাম পরিবর্তিত)। ইরান-ইজরায়েলের সংঘাত ক্রমশই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। সেই যুদ্ধে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে আতঙ্কের রাত কাটাতে হয়েছিল ভারতের শতাধিক পড়ুয়াকে।

প্রশাসনের তৎপরতায় ইতিমধ্যেই প্রথম দফায় ১১০ জন ভারতীয় পড়ুয়াকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, বাকি ভারতীয়দের দ্রুত দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। বিশেষ বিমানের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। দিল্লি বিমানবন্দরে নামার পর পড়ুয়াদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কেউ ফোনে বাড়ির সঙ্গে কথা বলে স্বস্তি পান, কেউ আবার নিশ্চিন্তে মাটিতে পা ছুঁয়ে ঈশ্বরকে কৃতজ্ঞতা জানান।

দিল্লি বিমানবন্দরে উপস্থিত এক অভিভাবক বললেন, ছেলেকে চোখের সামনে দেখে বুকটা হালকা হলো। ফোনে কথা হলেও চোখে না দেখা পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছিলাম না।

বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও জটিল হলে জরুরি অবতারণার জন্য অতিরিক্ত বিমানেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এক সরকারি আধিকারিক জানালেন, আমরা সবসময় পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি। ইরান ও ইজরায়েলে অবস্থানকারী ভারতীয়দের প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফেরানো হবে।

পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, একাধিক শহরে বোমা বিস্ফোরণের শব্দে ইরানে রাত কেটেছে তাঁদের। আতঙ্কে অনেকে ঘর ছেড়ে বেরোনোর সাহস পাননি । এক পড়ুয়া বললেন, ওই পরিস্থিতিতে কেউ ঘুমোতে পারবে না। জানলার পর্দা টেনে ঘরের এক কোণে বসে থাকতাম, প্রাণটা যেন বাঁচে কেবল প্রার্থনা করতাম ।

যুদ্ধের আবহে নতুন করে চিন্তিত পরিবারের সদস্যরা। বহু অভিভাবক সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।

এই মুহূর্তে ইরান-ইজরায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতি যে কোন দিকে মোড় নেবে, সেটাই বড় প্রশ্ন। কিন্তু পড়ুয়াদের নিরাপত্তাই এখন ভারতের কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধের বিভীষিকাময় সেই রাতের স্মৃতি নিয়ে ফিরলেও, আপাতত স্বদেশের মাটিতে পা রেখে খানিক নিশ্চিন্ত তাঁরা। কিন্তু আতঙ্কের সেই ভয়াবহ ছবি মনে পড়লেই এখনও কেঁপে উঠছেন পড়ুয়ারা।

Share this Article
Leave a comment