এয়ার ইন্ডিয়া AI-159 বাতিল: ফের বিপর্যয়ের আশঙ্কা, যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ

Sourav Mondal
3 Min Read
এয়ার ইন্ডিয়া AI-159 ফ্লাইট বাতিল

এয়ার ইন্ডিয়া AI-159 ফ্লাইট বাতিল : আমদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI-159 বাতিল হয়ে যায় হঠাৎ করে , আর সেই সঙ্গে সৃষ্টি হয় প্রবল বিভ্রান্তি ও ক্ষোভের পরিবেশ। দুপুর তিনটের সময় উড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে যাত্রীদের জানানো হয় যে ফ্লাইটটি ‘অপারেশনাল ত্রুটি’র কারণে বাতিল করা হয়েছে। অথচ একাধিক যাত্রী সেই সময়ে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন, ব্যাগেজ চেক-ইনও প্রায় সম্পন্ন, অথচ কেউই আগে থেকে কিছু জানতেন না।

এক যাত্রী বলেন, “আমি দুপুর ১টার ফ্লাইটে গ্যাটউইক যাচ্ছিলাম। হঠাৎ জানতে পারি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। কেন বাতিল, কী হবে আমাদের টিকিটের—কেউ কিছু জানাচ্ছে না। এরকমটা আগে কখনও দেখিনি।” এয়ার ইন্ডিয়ার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সংক্ষিপ্তভাবে জানানো হয়েছে, “অপারেশনাল সমস্যার কারণে ফ্লাইট বাতিল।” কিন্তু এতেই প্রশ্ন উঠছে—এই ‘অপারেশনাল ত্রুটি’ আদতে কী?

মাত্র ক’দিন আগেই ১২ জুন AI-171 নম্বরের ফ্লাইটটি, যা একই রুটে চলত, দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। উড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি ভেঙে পড়ে এবং অন্তত ২৭০ জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার AI-159-এর এই অপ্রত্যাশিত বাতিল, যেটি ওই পুরনো AI-171-এর প্রতিস্থাপিত ফ্লাইট নাম্বার। নাম বদলালেও যাত্রীদের মনে সেই আতঙ্ক আর প্রশ্ন একই রয়ে গেল।

শুধু এটুকুতেই থেমে নেই সমস্যার তালিকা। এর আগে সান ফ্রান্সিসকো থেকে মুম্বইগামী AI-180 ফ্লাইটের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ বিমানে ধরা পড়ে ইঞ্জিন ত্রুটি। মাঝ আকাশ থেকে কলকাতায় জরুরি অবতরণ করাতে হয়, সমস্ত যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হয় নিরাপত্তার কারণে। যদিও সেই ঘটনা নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, “ত্রুটি সঙ্গে সঙ্গে মেরামতযোগ্য না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত।”

এই সব ঘটনার পর সাধারণ যাত্রীদের প্রশ্ন একটাই—এতগুলো ঘটনা কাকতালীয়, না কি বড় কোনও রক্ষণাবেক্ষণ দুর্বলতার ইঙ্গিত? যাত্রীরা বলছেন, শুধু ‘ফ্লাইট ক্যানসেলড’ জানিয়ে কিংবা ওয়েবসাইটে এক পংক্তির বিবৃতি দিয়ে দায় সারা যাবে না। যাত্রীদের জীবন, নিরাপত্তা আর সময়—এই তিনটিরই সম্মান রক্ষা করাই একটি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থার দায়িত্ব হওয়া উচিত।

ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকা—এসব সত্যিই সমস্যা হতে পারে, কিন্তু সেটি কীভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে, সেটিই মূল প্রশ্ন। কারণ সবশেষে যাত্রী চায় সুরক্ষা, স্বচ্ছতা আর বিশ্বাসযোগ্য পরিষেবা—যা হঠাৎ বাতিল হওয়া কোনও ফ্লাইটে বা বিমানের মাঝ আকাশে ইঞ্জিন থেমে যাওয়ায় মিলছে না। আর সেই অভাব থেকেই জন্ম নিচ্ছে ক্ষোভ, উদ্বেগ ও হতাশা।

Share this Article
Leave a comment