কেদারনাথ যাত্রায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, ধসের জেরে মৃত ১, বন্ধ তীর্থযাত্রা

Sourav Mondal
3 Min Read
কেদারনাথ ধস দুর্ঘটনা 2025

কেদারনাথ ধস দুর্ঘটনা 2025 : উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ যাত্রাপথে ফের প্রাকৃতিক বিপর্যয়। টানা প্রবল বৃষ্টির জেরে সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ যাওয়ার পথে ভয়াবহ ধস নামল। জঙ্গলচট্টির কাছে ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক পুণ্যার্থীর। ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুই তীর্থযাত্রী। ইতিমধ্যেই ধসে ক্ষতিগ্রস্ত ওই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং প্রশাসনের তরফে অনির্দিষ্টকালের জন্য কেদারনাথ যাত্রা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

রুদ্রপ্রয়াগ জেলার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই কেদারনাথ রুটে একটানা ভারী বৃষ্টি চলছে। তার জেরেই শনিবার জঙ্গলচট্টি সংলগ্ন এলাকায় আচমকা ধস নামে। বিশালাকার পাথর গড়িয়ে পড়ে নিচে থাকা যাত্রীদের উপর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। আহত দু’জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাস্তা কার্যত পাথর এবং ধ্বংসস্তূপে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। ধসে আটকে পড়া বহু পুণ্যার্থীকে উদ্ধার করার কাজ চলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেদারনাথধামে অবস্থানরত যাত্রীদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া হয়েছে, তারা যেন কোনওভাবেই পাহাড়ি রাস্তায় না বেরোন এবং যতটা সম্ভব হোটেল বা আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে থাকেন।

এই মুহূর্তে রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় আবহাওয়া দফতরের তরফে ‘হলুদ সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে চারধাম যাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল। এরপর ২ মে কেদারনাথ এবং ৪ মে বদ্রীনাথের দরজা খুলে দেওয়া হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী ভিড় জমিয়েছেন কেদারনাথ যাত্রাপথে। কিন্তু, প্রকৃতির সামনে মানুষ অসহায় — ফের একবার তারই প্রমাণ মিলল শনিবারের এই দুর্ঘটনায়।

গত কয়েক বছরে এই এলাকায় একাধিকবার ভূমিধস এবং হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর সামনে এসেছে। ফলে নিরাপত্তা এবং তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বারবার।

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কেদারনাথ যাত্রা বন্ধই থাকবে। কবে আবার যাত্রা শুরু হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনও নির্দিষ্ট দিন ঘোষণা করা হয়নি।

তীর্থযাত্রীদের কাছে আবেদন, এই মুহূর্তে কেউ যেন ওই রুটে যাত্রা না করেন এবং শুধুমাত্র প্রশাসনের তরফে দেওয়া নির্দেশিকা মেনে চলেন। নিরাপত্তাই এখন সবচেয়ে বড় বিষয়। প্রকৃতি কখনও কখনও বিরূপ হয়ে ওঠে। কিন্তু সচেতনতা আর সতর্কতা থাকলেই বড় বিপদও এড়ানো সম্ভব। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে আরও বড় বিপর্যয় এড়ানো গিয়েছে—এই আশাই রইল।

Share this Article
Leave a comment